সর্বশেষ
  কুরবানি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিধান। মুফতি শরীফ মোহাম্মদ সাঈদ   লন্ডনে সিম্পল রিজনের অফিস পরিদর্শন করলেন মুফতি সাইফুল ইসলাম   লিডসে শায়েখে বাঘা রহঃ-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত   বার্মিংহামে শায়েখে বাঘা রহঃ জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত   লন্ডনের সভায় আলেমরা বি এ এস বি কমপ্লেক্সকে সহযোগিতার আহবান জানালেন।   বইঃ বশীর আহমদ শায়খে বাঘা রহঃ   বায়রাক্তার টিবি২ দীপ্তিমান করছে তুরস্কের ভাগ্য   জার্মানিতে বছরে শতাধিক মসজিদে হামলা; উদ্বিগ্ন মুসলিমরা   বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের মহানায়ক!   ডুরান্ড লাইন! পাক - আফগান দ্বন্দ্বের রেড লাইন!   ত্রিপুরা ও বাংলার ঐতিহাসিক সম্পর্ক | পর্ব ২   ত্রিপুরার সাথে ইসলাম এবং বাংলাদেশের সহস্র বছরের যোগসূত্রের সন্ধানে!   আসামের বর্তমান পরিস্থিতি!   আসামে ইসলামের আগমন ও এন আর সি ক্রাইসিস।   নবাব নুর উদ্দিন মুহাম্মদ বাকের জং। ইতিহাসে ঠাঁই না পাওয়া বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব!   প্রাক-ইসলামিক আরব। ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি।   ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের অবিচ্ছিন্ন জলপথ আবিষ্কার।   আফ্রিকার বুকে পর্তুগীজ কলোনি স্থাপনের ইতিহাস।   পূর্ব আফ্রিকায় পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপন, শোষণ ও ফলাফল   ধর্ষণের আলামত যেভাবে পরীক্ষা করা হয়।   মেটাভার্স   বাংলাদেশের সাথে সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে চায় তুরস্ক   লিবারেলিজম।   ইউরোপে ইসলাম বিদ্বেষের উত্থান।    পাকিস্তানে ইসলামী দল, তেহরিক-ই-লাব্বাইক নিষিদ্ধের ঘোষণা।   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব- ১১। নেতৃত্বের যোগ্যতা ও ব্যর্থ নেতৃত্ব।   ২০২০ সালের দিল্লি সহিংসতা ছিল একটি সংগঠিত, পরিকল্পিত ‘প্রোগ্রাম’। এবং কেন?   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৭   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৬   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৫   ২০০২ সালের গুজরাট গণহত্যা ও নরেন্দ্র মোদি   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৪   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৩   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-২   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-১   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব- ১০   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৯   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৮   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৭   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৬   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৫   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৪   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৩   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-২   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-১   রিবা নির্মূল হতে পারে সীরাতের পন্থায়!   ১৯৯১ সালে কাশ্মীরের কুনান ও পোশপোরায় গণধর্ষণ। আজও বিচার হয়নি।   নজরদারি: ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত’   ব্যবসার সঙ্গে অন্য সংস্কৃতিকে যুক্ত করার এজেন্ডা!

দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৭

৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:৪১ অপরাহ্ণ

    শেয়ার করুন

হোসাইন আহমদ:
বইঃ The Room Where it Happened.  লেখকঃ জন বোল্টন। প্রকাশকঃ Simon and Schuster. আলোচ্য বিষয়ঃ আমেরিকা-ইসরাইল সম্পর্ক। ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধে অনীহা। আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহার। আমেরিকা তালাবান চুক্তি। এরদোয়ান-ট্রাম্প দরকষাকষী। ইরান চুক্তি এবং উত্তর কোরিয়া। জন বোল্টনের এই বই পড়লে কিছুটা মেপে নেয়া যায় আমেরিকান প্রশাসনে থাকা অহংকারকে। কিন্তু আফগানিস্তান ইস্যু এলেই সেটা যেন ভেঙ্গে গুড়িয়ে যায়। সেখানে শুধু পরিলক্ষিত হয় আফসোস ও দোষারোপ। চ্যাপ্টার ১১তে বোল্টন আফগান ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। এখানে চ্যাপ্টার ১৩তে এসেও তিনি মূলত আফগান ইস্যু নিয়েই  আলোচনা করেছেন।

জুলমে খলীলজাদের নেতৃত্বে তালেবানের সাথে আমেরিকার যে দেনদরবার চলছিল, সেখানে আমেরিকার দাবি ছিলঃ “the US government opposed any such arrangement unless it was “condition based,” meaning we would go to zero only if: (1) there were no terrorist activities in the country; (2) ISIS and Al-Qaeda were barred from establishing operating bases; (3) we had adequate means of verification.”  অর্থাৎ তালেবানদের দাবি অনুযায়ী আমেরিকা তাদের সৈন্য সঙ্গখ্যা শূন্যতে নিয়ে আসার চুক্তি করবে শর্তসাপেক্ষে। (১) সেদেশে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম থাকবে না। এই শর্তটা আমার কাছে মনে হয়েছে একটি সেন্সলেস শর্ত। একসময় তালেবানকে সন্ত্রাসী বলতো আমেরিকা। এখন বলে না। সুতরাং সে দেশে সন্ত্রাসী আগের মত থাকলেও, তাদেরকে সন্ত্রাসী বলা হবে কিনা সেটা অ্যামেরিকার হাতে! সন্ত্রাসী নেই, আমেরিকা এটা বলে দিলে বেরিয়ে আসতে কোনো বাধাই থাকে না। (২) আইএস ও আল-কায়েদা যাতে তাদের কোনো কার্যক্রম চালাতে পারে না। এই শর্তে অসাধারণ গলদ। সচেতন মাত্রই জানেন আল-কায়েদাই তালেবান ও তালেবানই আল কায়েদা। হক্কানী নেটওয়ার্ক আল কায়েদার অংশ। আর হক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান তালেবানের ডেপুটি। অর্থাৎ তালেবানের সাথে চুক্তির আলোচনা মানে হল আল-কায়েদার সাথেই চুক্তির জন্য আলোচনা চলছে। অথচ আমেরিকা আল-কায়েদাকে সন্ত্রাসী বলছে, কিন্তু তালেবানকে সন্ত্রাসী বলছেনা। (৩) এসব কিছুর ভেরিফিকেশনের ব্যবস্থা থাকবে। সকল সৈন্য ফেরত নিয়ে আসলে কে সেটা ভেরিফাই করবে? তালেবান যদি বলে এখানে কোনো সন্ত্রাসী নেই, আমেরিকাকে সেটাই মেনে নিতে হবে। এজন্য বোল্টন এটাকে বলেছেনঃ “This was touchingly naive.” অর্থাৎ এসব শর্তারোপ ছিল মর্মস্পর্শী, বোকার মত বা শিশুসুলভ।

অনেকেই ভাবতে পারেন, মনে হয় ট্রাম্প একাই শুধু তালেবানের সাথে চুক্তি করতে চায়। বিষয়টা এমন নয়। বরং পুরো আমেরিকান প্রশাসন উদগ্রীব ছিল তালেবানের সাথে কোনরকম একটি চুক্তি করে বেরিয়ে আসতে। যেমন, “Pompeo insisted it was the Pentagon that wanted a deal with the Taliban. to diminish threats to US personnel as we reduced our presence; without such an agreement, the risks to the shrinking US forces were too great.” অর্থাৎ সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইক পম্পেও বলছিলেন, মূলত পেন্টাগন বা আমেরিকান ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট বা আমেরিকান মিলিটারি যেটাই বলেন, তারা চাচ্ছিল তালেবানের সাথে একটা চুক্তি হয়ে যাক। যাতে সৈন্যদের হতাহত হওয়া থেকে বাঁচানো যায়। কারণ অলরেডি ডুবতে থাকা আমেরিকান বাহিনীর জন্য চুক্তি ছাড়া বেরিয়ে আসা চূড়ান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।

বোল্টন লিখেছেন আমেরিকার জন্য “কন্ডিশন বেইজড” বেরিয়ে আসার ব্যাপারটা নেশার মত কাজ করেছে। অনেকেই এতে খুশি হয়েছেন। কিন্তু এই খুশি ছিল সাময়িক। কারণ তালেবানদের মূল দাবি “টোটাল উইথড্রয়াল”। এসব শর্ত ভেঙ্গে গেলে তালেবানদের কিছুই যায় আসেনা। ট্রাম্পের মতে “Once we were on the nosedive to zero, that's where we would finish.” অর্থাৎ আমাদের সৈন্য সংখ্যা শূন্যতে নিয়ে আসার সাথে সাথেই আমরা শেষ হয়ে যাব। আমাদের কোনো প্রভাব বা কথা বলার অধিকার থাকবে না। মোটকথা আমরা অপয়া হয়ে যাব।

তালেবানদের সাথে আলোচনা যত আগাচ্ছিল, আমেরিকার সকল হিসেব নিকেশ উলট-পালট হচ্ছিল। একের পর এক আমেরিকাকে অবস্থান বদলাতে হচ্ছিল। বোল্টন লিখেছেন “মার্চের ২১ তারিখে Shannan and Dunford brought a chart. Showing several ways the state department had departed from what the Pentagon believed were the agreed negotiating guidelines. objectives were completely detached from what I considered to be our objectives.” অর্থাৎ সানাহান ও ডানফোর্ড একটি চার্ট এনে দেখাচ্ছিলেন কিভাবে ও কতটুকু স্টেট ডিপার্টমেন্ট অরজিনাল নেগোসিয়েশন গাইডলাইন থেকে সরে এসেছে। বোল্টনের কাছে মনে হয়েছে, প্রাথমিক লক্ষ্য থেকে আমেরিকা সম্পূর্ণরূপে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে। আমার মতে এটা আমেরিকার পরিস্কার পরাজয়।

আগস্টের ১৬ তারিখ শুক্রবার জুলমে খলিলজাদ ও পম্পেও এর সাথে স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির সহ অন্যান্য ডিপার্টমেন্টকে নিয়ে এক বিশাল গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়। যেন “A small army of people would be attending the Bedminster meeting.” যেন ছোট এক আর্মি মিটিংয়ে যুক্ত হচ্ছিল। দুপুর একটার কিছু পরে মিটিং পম্পেও এর “we are not quite done with the Taliban অর্থাৎ তালেবানের সাথে চুক্তির পুরোটা সমাধান হয়নি, এ কথা বলার মাধ্যমে শুরু হয়। একটু পরে ট্রাম্প আফগান প্রেসিডেন্ট গণীর বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেন। কীভাবে দুবাইয়ে গণী ফ্ল্যাটবাড়ি করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। ট্রাম্পের মেজাজ আরো গরম হয়, যখন পম্পেও বলেন গণী তো এখন প্রেসিডেন্ট। এবং মিলিটারি তার নিয়ন্ত্রণে। “Who pays them? অর্থাৎ মিলিটারি ও গণীকে বেতন দেয় কে? এসপার বললেন “We do.” তখন ট্রাম্প আরো গরম হয়ে উঠেন। ম্যাটিসের ব্যাপারে বলেন, যিনি প্রায়ই বলতেন “These soldiers are fighting bravely for their country.”। অর্থাৎ আফগান সৈন্যরা সাহসিকতার সঙ্গে দেশের জন্য কাজ করছে। এসময় ট্রাম্প জানতে পারলেন, আফগান সৈন্যদের পেছনে আমেরিকাকে বছরে প্রায় ৬.৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়। ট্রাম্প বললেনঃ “they are the most highly paid soldiers in the world”। অর্থাৎ এরাতো বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সেনাবাহিনী।

এখান থেকে বিশাল একটি ফ্যাক্ট বেরিয়ে এসেছে। সেটা হল আমেরিকা আফগান থেকে বেরিয়ে এলে সেদেশের আর্মিকে ফান্ডিং দেওয়াও বন্ধ হয়ে যাবে। এতে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে পুরো আফগান ফোর্স। বিজয়ের জন্য তালেবানকে যুদ্ধ করতে হবে না। এটা অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে থাকা বা এর বাইরের সতর্ক এক্টররা সবাই জানেন। এজন্য দেখা গেছে বিভিন্ন দেশ কাবুল সরকারকে নয়, তালেবানকে দাওয়াত করছে তাদের দেশে অফিশিয়াল সফরের জন্য।

এরপর মিটিংয়ে ট্রাম্প বলেনঃ “They hate us to. Tliban wants their land. We went into take their land.” অর্থাৎ তারা আমাদের ঘৃণা করে। কারণ তারা তাদের দেশ ফেরত চায়। আমরা তাদের দেশ দখলের জন্য তাদের দেশে গিয়েছি।

যাক খলিলজাদ জানান এসপার, ডানফর্ড, হাসপেল সহ সকলেই খসড়া  তালেবান চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছেন। বোল্টন বলছিলেন তিনি এমন লজ্জাজনক চুক্তির সাথে একমত নন। তখন খলিলজাদ বলেনঃ “This was the best we could do.” অর্থাৎ এটাই বেস্ট। এর চেয়ে ভাল চুক্তি নিয়ে আসা আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।

সকল সৈন্য প্রত্যাহারের তালেবানের ডিমান্ড মেনে নেয়া সত্যিই এক লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ট্রাম্প নিজেও সেটা বুঝতে পারছিলেন। “Pompeo thought Tump appreciated how devastating it would be to see the ‘zero’ level in writing. especially with all the condition-based language somewhere out in the weeds.” অর্থ্যাৎ সৈন্য সংখ্যা শূন্যতে নামানো হবে। কিন্তু পূর্বকার সিদ্ধান্ত ছিল চুক্তি হবে “শর্তসাপেক্ষ”। সেই ‘শর্তসাপেক্ষ’ এর খবর নাই। এর পরিণাম হবে মারাত্মক। এজন্য পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে ফক্স নিউজের সাথে একটি রেডিও ইন্টারভিউয়ে ট্রাম্প বলেনঃ “We are going to keep a presence there.” অর্থাৎ আমাদের কিছুটা উপস্থিতি থাকবে সেখানে। যদিও সেটা ছিল ভুয়া। কারণ পুরো সৈন্যবাহিনী প্রত্যাহারের পর কিভাবে সেখানে উপস্থিতি থাকবে। এমন কোন কথা চুক্তিতেও লেখা নেই। ঐতিহাসিক যুদ্ধ, বিশাল অঙ্কের অর্থনৈতিক ব্যয়, সম্পূর্ণটা পানিতে যাবে।

মিটিংয়ের একপর্যায়ে ট্রাম্প বলেন: “I want to speak to the Taliban. let them come to  Washington”. Trump said. I want Ghani here too, as well as the Taliban. Let's do it before it's signed. I want to meet before it's signed. not a phone call.” অর্থাৎ আমি তালেবানদের সাথে সরাসরি মিটিং করতে চাই। সাথে গণীকেও দাওয়াত করো। এখানে ওয়াশিংটনে। এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। সেদিনের আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু ছিল ইউক্রেন ইস্যু। কিন্তু সে ব্যাপারে কোনো আলোচনার সুযোগই তৈরি হয়নি। পুরো সময়টা আফগানিস্তানেই চলে যায়। যাইহোক আমেরিকার জন্য পরিষ্কারভাবে এই যুক্তি একটি রাজনৈতিক ঝুকি ও পরাজয় হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। কিন্তু করার কিছুই ছিল না। এদিকে Trump wanted the Taliban and Ghani meeting at Camp David.” ট্রাম্প চাচ্ছিলেন মিটিংটা ঐতিহাসিক ক্যাম্প ডেভিডে হোক। এই স্থান আমেরিকার অনেক ইতিহাসের সাথে জড়িত। এবং আমেরিকানদের জন্য একটি গর্ব করার মত জায়গা। সেখানে তালেবান মিটিংয়ের আয়োজনের জন্য সকল ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। সিকিউরিটি ব্যবস্থায় বেশি কড়াকড়ি না রাখার জন্য ট্রাম্প বলে দেন। বলেন। এতে তালেবান আপসেট হতে পারে। “He (trump) worried that too-intrusive security measure would offend the Taliban dignity.”

যাইহোক এত প্রস্তুতি থাকলেও আমেরিকান প্রশাসনের অস্থিরতা ছিল এই নিয়ে যে, আমেরিকার জন্য কত খারাপ হয়েছে এই চুক্তি। এটা চুক্তি নয় বরং সারেন্ডার। এমতাবস্থায় কাবুলে তালেবানের হামলা ও একজন আমেরিকান সৈন্য নিহতের খবর এল। নাইন ইলেভেনের হামলা বার্ষিকির দিনের ঠিক আগমুহূর্তে ট্রাম্পের সাথে হামলাকারীদের প্রশ্রয়দাতা তালেবানদের সাথে ক্যাম্প ডেভিডে বৈঠক হলে বিশাল এক খারাপ প্রভাব ফেলবে। ব্যাপারটা আস্তে আস্তে বড় হচ্ছিল ট্রাম্পের কাছে। বোল্টন ও অন্যান্যরা ভাবলেন এ বিষয়ে ট্রাম্পকে বলা দরকার। কমপক্ষে যদি কিছুটা দেরি করানো যায়। এমতাবস্থায় ট্রাম্প নিজ থেকেই বললেন “put out a statement that says, “we had a meeting scheduled, but They killed one of our soldiers and nine other, so we cancelled it? there should be a cease-fire, or I don't want to negotiate. We should drop a bomb, hit ‘em hard. If they can’t do a cease-fire I don't want an agreement.” অর্থাৎ তারা আমাদের একজন সৈন্য হত্যা করেছে বলে মিটিং ক্যানসেল করে দাও। যুদ্ধবিরতি না করলে তাদের সাথে কোন আলোচনা নয়। আমাদের উচিত তাদের উপর বড় বড় বোমা ফেলা। তারা যদি যুদ্ধবিরতি না করে আমিও চুক্তি করতে চাইনা।

কিন্তু ট্রাম্পের এসব কথা বলার আগে ভেবে দেখা উচিত ছিল, তালেবানরা ট্রাম্পের সাথে চুক্তি করছে না। চুক্তি হচ্ছে আমেরিকার সাথে। আর এই আলোচনাযও ট্রাম্পের সময়কালে শুরু হয়নি। শুরু হয়েছে অনেক আগে। আলোচনা শুরু করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। আলোচনার মধ্যস্থতায় কাতার, নরওয়ে, রাশিয়া সহ অনেক দেশই উপস্থিত ছিল। তাই একটি স্ট্যাটমেন্ট দিয়ে সেটাকে ক্যানসেল করা সম্ভব নয়। এদিকে কাবুলে  থাকা গণীর সরকার যা ভাবছেন, যে ইলেকশনে জিতে যদি বাইডেন প্রশাসন আসে, তাহলে হয়তো চুক্তি বাতিল হতে পারে। সেটাও সঠিক নয়। কারণ একই। চুক্তি পুরো প্রশাসনের সাথে হয়েছে। আর আমেরিকান প্রশাসন আফগানের ডুবছে। কোন মিরাকল না হলে, এটা বাস্তবায়িত হতে থাকবে। আর বোমা মেরে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে পারলে তো অনেক আগেই সেটা করা যেত। অতএব এসব ছেলেমানুষি কতা ছিল। তবে আলোচনা বন্ধের এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় তালেবানরা বলেছিলেন, “USA would be harmed more than anyone” by cancelling that meeting.” অর্থাৎ এতে সবচেয়ে বেশি আমেরিকারই ক্ষতি হবে। তারা বলেছিলেন যুদ্ধ আমরা ১৮ বছর করেছি, প্রয়োজনে আরও ১৮ বছর করব।

যাইহোক, পরবর্তীতে জন বোল্টন তার পদ থেকে রিজাইন করেন। এবং ট্রাম্পও তালেবানদের সাথে আলোচনা পুনরায় শুরু করেন। “on Saturday February 29th 2020 the United State and the Taliban signed an agreement that, in my view looked very much like the agreement that had come unstuck in September.” অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি তালেবানের সাথে আমেরিকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যার টার্ম এন্ড কন্ডিশন  ক্যানসেল হওয়া চুক্তির মতোই ছিল।

জন বোল্টনের এই বইয়ের পরবর্তী চ্যাপ্টারগুলোতে আমাদের মতো আন্তর্জাতিক পাঠকদের জন্য আর তেমন প্রয়োজনীয় কোন খোরাক নেই। সুতরাং আমরা এখানেই “the room where it happened” বইটি নিয়ে আলোচনার সমাপ্তি টানছি।

অবশ্য এই চ্যাপ্টার নিয়ে লেখার সময় অলরেডি আমেরিকার ৫৯তম প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশন সমাপ্ত হয়েছে। এতে ট্রাম্প পরাজয় বরণ করেন। কিন্তু ট্রাম্প পরাজয় স্বীকার না করে ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে কোর্টে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সিনেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাইডেনই বিজয়ী। সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিন ট্রম্প সর্মথকরা ক্যাপিটল হলে হামলা করে। এই হামলা কে অনেকেই ৯/১১ এর চেয়েও বড় হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এ যেন পুরো আমেরিকান সিস্টেমের উপর হামলা। এদিকে ডেমোক্রেটরা ট্রাম্পকে ইমপিচ করতে সক্ষম হয়েছেন। এটা আমেরিকার ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। তবে এটা পরিষ্কার উস্কানিও বটে। ২০২১ সালের পরবর্তী দিনগুলোতে আমরা অনেক যুগান্তকারী ঘটনা প্রত্যক্ষ করবো বলে মনে করছি।
সমাপ্ত। ১৭/০১/২০২১।

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

কুরবানি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিধান। মুফতি শরীফ মোহাম্মদ সাঈদ

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লন্ডনে সিম্পল রিজনের অফিস পরিদর্শন করলেন মুফতি সাইফুল ইসলাম

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লিডসে শায়েখে বাঘা রহঃ-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লন্ডনের সভায় আলেমরা বি এ এস বি কমপ্লেক্সকে সহযোগিতার আহবান জানালেন।

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বইঃ বশীর আহমদ শায়খে বাঘা রহঃ

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বার্মিংহামে শায়েখে বাঘা রহঃ জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বায়রাক্তার টিবি২ দীপ্তিমান করছে তুরস্কের ভাগ্য

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

জার্মানিতে বছরে শতাধিক মসজিদে হামলা; উদ্বিগ্ন মুসলিমরা

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের মহানায়ক!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ডুরান্ড লাইন! পাক - আফগান দ্বন্দ্বের রেড লাইন!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ত্রিপুরা ও বাংলার ঐতিহাসিক সম্পর্ক | পর্ব ২

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ত্রিপুরার সাথে ইসলাম এবং বাংলাদেশের সহস্র বছরের যোগসূত্রের সন্ধানে!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

পূর্ব আফ্রিকায় পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপন, শোষণ ও ফলাফল

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

আফ্রিকার বুকে পর্তুগীজ কলোনি স্থাপনের ইতিহাস।

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের অবিচ্ছিন্ন জলপথ আবিষ্কার।

the global affairs google play logo the global affairs apple logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হোসাইন আহমদ

info@theglobalaffairs.info