হোসাইন আহমদ।
বইঃ The Room Where it Happened. লেখকঃ জন বোল্টন। প্রকাশকঃ Simon and Schuster. আলোচ্য বিষয়ঃ আমেরিকা-ইসরাইল সম্পর্ক। ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধে অনীহা। আমেরিকান সৈন্য প্রত্যাহার। আমেরিকা তালাবান চুক্তি। এরদোয়ান-ট্রাম্প দরকষাকষী। ইরান চুক্তি এবং উত্তর কোরিয়া।
জন বোল্টন আমেরিকার সাবেক ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজার। আমেরিকাতে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজারের পদ অত্যন্ত প্রেস্টিজিয়াস পদ। ট্রাম্প আমলে ৪৫৩ (২০১৮-২০১৯) দিন এই পদে থাকা অবস্থায় বেশিরভাগ সময়ই তিনি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া রুমে অবস্থান করেছিলেন। এজন্য এই বইয়ের নাম দিয়েছেন ‘the room where it happened’। অর্থাৎ সেই রুম যাতে এসব ঘটেছিল।
হোয়াইট হাউসে ব্যয় করা তার সময়কালের কাহিনী নিয়ে সাড়া জাগানো এই বই খুব উৎসাহ নিয়ে কিনেছিলাম। কিন্তু যতো পৃষ্ঠা উল্টেছি ততো আমাকে হতাশ হতে হয়েছে। অনেক অপ্রয়োজনীয় তথ্যে ভরপুর। যা শুধুই বইয়ের কলেবর বৃদ্ধি করেছে। কখন কার সাথে নাস্তা করলেন, লাঞ্চ করলেন ইত্যাদি তথ্যে পৃষ্টার সংখ্যা শুধু বৃদ্ধিই পেয়েছে।
প্রায় ৬০০ পৃষ্ঠার এই বইয়ের মূল লেখা প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠার। চলুন দেখি এখানে আমরা কি পেতে পারি।
প্রথম চ্যাপ্টারের আলোচনা হয়েছে তিনি কিভাবে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজার নিযুক্ত হলেন। এর প্রসেস ও এ পথের বাধা-বিপত্তি নিয়েও কিছু বলেছেন।
একটু এগিয়ে ২৭ নাম্বার পৃষ্টায় তার সাথে জেরার্ড কুশনারের আলোচনা তুলে ধরেছেন। কুশনার হলেন ট্রাম্পের মেয়ের জামাই। আনঅফিসিয়ালি অত্যন্ত প্রভাবশালী ও প্রো-ইসরাইলি একজন ব্যক্তি। আর জন বোল্টনও প্রো-ইসরাইলি। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণায় এই কুশনারের ব্যাপক অবদান রয়েছে। তাছাড়া থ্রেট হিসেবে আরব রাষ্ট্রগুলোর মনোযোগ ইসরাইল থেকে ইরানের দিকে শিফট করতে কুশনারের ভূমিকা দেখা গেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখছি, কিভাবে আরব রাষ্ট্রগুলোর, বিশেষ করে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক নর্মালাইজ করছে ও ইরানের সাথে সম্পর্ক উত্তপ্ত করছে। ইরানকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান-তুরস্কের সাথে সৌদি-আমিরাত সম্পর্কের অবনতি ঘটতেও দেখেছি।
ট্রাম্পের ব্যাপারে বোল্টন বেশ ইন্টারেস্টিং তথ্য দিয়েছেন এই বইয়ে। এসব তথ্য যাচাই করলে বুঝা যায় কেন তার নিজের দল রিপাবলিকানরাও তাকে আর চায় না। তাছাড়া ট্রাম্প আমেরিকার নোংরা রাজনীতিকে অনাবৃত করেছেন। একে অন্যের প্রতি তাদের ন্যূনতম সম্মান নেই।
প্রশাসনের কোন পদে আসতে চান, ট্রাম্পের সাথে এমন আলোচনার একপর্যায়ে ট্রাম্প বলেন আমি তোমাকে সেক্রেটারি অফ স্টেট দেখলে খুশি হব। কিন্তু “that son of a bitch Rand paul will vote against you’’। ঐ কুত্তার বাচ্চা তোমার বিপক্ষে ভোট দেবে। এরপর ট্রাম্প জিজ্ঞেস করছেন অন্য কোন পদটি তোমার পছন্দ? বোল্টন উত্তর দিলেন ন্যাশনাল সিকিউরিটি এডভাইজারের পদ। তখন ট্রাম্প বললেন “So, I don't have to worry about those clowns up there? and both Kelly and I said, “right.” অর্থাৎ সিনেটের সদস্যদের ট্রাম্প বলছেন ক্লাউন। আর বোল্টন ও কেলি এর সমর্থন জানিয়েছেন। এই হল বর্তমান আমেরিকান প্রশাসনের মধ্যকার সম্মান ও সংহতির অবস্থা।
সিরিয়ায় আসাদের কেমিক্যাল হামলা ও তৎপরবর্তী ট্রাম্পের বক্তব্য “My honor is at stake’’ এর পরের আলোচনায় সুন্দর একটি উদ্ধৃতি এনেছেন বোল্টন। “fear, honor and interest’ are the main drivers of international politics and Ultimately war.” পাশ্চাত্য বা সাধারণভাবে অনৈসলামিক রাজনীতির প্রকৃতিকে এই একটি বাক্য একসাথে নিয়ে এসেছে। যারাই আন্তর্জাতিক রাজনীতি নিয়ে ভাবতে চান, তাদেরকে এই তিনটি সূত্র আমলে নেওয়া উচিত। ভয়, সম্মান ও স্বার্থ। এগুলোকে ঠিকমত ম্যানেজ করতে পারলে যুদ্ধে বিজয় সম্ভব। তবে যারা ইসলামী রাজনীতির প্রকৃতি জানেন না, তারা এখানে এসে ধাক্কা খান। কারণ তারা এই তিনটি বিষয় দিয়ে ইসলামের রাজনীতি ও রাজনীতিকদের মাপতে চান। তখন হিসাব মেলে না। পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, ইসলামের রাজনীতিতে ব্যক্তি বা রাষ্টের স্বার্থ নয়, কিংবা ব্যক্তি বা দেশের সম্মান নয়, বরং ইসলামের নীতির সম্মান ও স্বার্থই মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
আন্তর্জাতিক আইন, আন্তর্জাতিক কোর্ট এসবের আসলেই কি কোন বাস্তবতা আছে? বাস্তবে এগুলো কি আসলেই আন্তর্জাতিক না শক্তিমানের জন্য দুর্বলের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হাতিয়ার? এবং জাতিসংঘ! এটা কি আসলেই বিভিন্ন জাতি রাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষন করে? আর শক্তিমানরাইবা একে কিভাবে দেখেন? আসলে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো এসব আন্তর্জাতিক চুক্তির তেমন পরোয়া করে না। আমেরিকা যখন সিরিয়ায় হামলা করল, তখন জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতেরেস এই হামলার সমালোচনা করলেন। কারণ সিকিউরিটি কাউন্সিল থেকে অথোরাইজেশন নেওয়া হয়নি। অতএব তা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ছিল না। এই সমালোচনার উপর বোল্টন মন্তব্য করেছেন “Which some of us thought was ridiculous.” তার এ কমেন্ট থেকে বুঝা যায়, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ ইত্যাদি সংস্থাগুলোকে আমেরিকান রাজনীতিকরা কিভাবে তাচ্ছিল্যের নজরে দেখেন। রিডিকুলাস! তাদের কাছে এসবের কোন মূল্যই নেই। এগুলো শুধু অনুগতদের সঠিকভাবে ম্যানেজ ও পরিচালনার জন্য তৈরি করা হয়েছে। (চলবে...।)
কুরবানি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিধান। মুফতি শরীফ মোহাম্মদ সাঈদ
লন্ডনে সিম্পল রিজনের অফিস পরিদর্শন করলেন মুফতি সাইফুল ইসলাম
লিডসে শায়েখে বাঘা রহঃ-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
লন্ডনের সভায় আলেমরা বি এ এস বি কমপ্লেক্সকে সহযোগিতার আহবান জানালেন।
বইঃ বশীর আহমদ শায়খে বাঘা রহঃ
বার্মিংহামে শায়েখে বাঘা রহঃ জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
বায়রাক্তার টিবি২ দীপ্তিমান করছে তুরস্কের ভাগ্য
জার্মানিতে বছরে শতাধিক মসজিদে হামলা; উদ্বিগ্ন মুসলিমরা
বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের মহানায়ক!
ডুরান্ড লাইন! পাক - আফগান দ্বন্দ্বের রেড লাইন!
ত্রিপুরা ও বাংলার ঐতিহাসিক সম্পর্ক | পর্ব ২
ত্রিপুরার সাথে ইসলাম এবং বাংলাদেশের সহস্র বছরের যোগসূত্রের সন্ধানে!
পূর্ব আফ্রিকায় পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপন, শোষণ ও ফলাফল
আফ্রিকার বুকে পর্তুগীজ কলোনি স্থাপনের ইতিহাস।
ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের অবিচ্ছিন্ন জলপথ আবিষ্কার।
কুরবানি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিধান। মুফতি শরীফ মোহাম্মদ সাঈদ
লন্ডনে সিম্পল রিজনের অফিস পরিদর্শন করলেন মুফতি সাইফুল ইসলাম
লিডসে শায়েখে বাঘা রহঃ-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
লন্ডনের সভায় আলেমরা বি এ এস বি কমপ্লেক্সকে সহযোগিতার আহবান জানালেন।
বইঃ বশীর আহমদ শায়খে বাঘা রহঃ
বার্মিংহামে শায়েখে বাঘা রহঃ জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
বায়রাক্তার টিবি২ দীপ্তিমান করছে তুরস্কের ভাগ্য
জার্মানিতে বছরে শতাধিক মসজিদে হামলা; উদ্বিগ্ন মুসলিমরা
বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের মহানায়ক!
ডুরান্ড লাইন! পাক - আফগান দ্বন্দ্বের রেড লাইন!
ত্রিপুরা ও বাংলার ঐতিহাসিক সম্পর্ক | পর্ব ২
ত্রিপুরার সাথে ইসলাম এবং বাংলাদেশের সহস্র বছরের যোগসূত্রের সন্ধানে!
পূর্ব আফ্রিকায় পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপন, শোষণ ও ফলাফল
আফ্রিকার বুকে পর্তুগীজ কলোনি স্থাপনের ইতিহাস।
ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের অবিচ্ছিন্ন জলপথ আবিষ্কার।