সর্বশেষ
  কুরবানি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিধান। মুফতি শরীফ মোহাম্মদ সাঈদ   লন্ডনে সিম্পল রিজনের অফিস পরিদর্শন করলেন মুফতি সাইফুল ইসলাম   লিডসে শায়েখে বাঘা রহঃ-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত   বার্মিংহামে শায়েখে বাঘা রহঃ জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত   লন্ডনের সভায় আলেমরা বি এ এস বি কমপ্লেক্সকে সহযোগিতার আহবান জানালেন।   বইঃ বশীর আহমদ শায়খে বাঘা রহঃ   বায়রাক্তার টিবি২ দীপ্তিমান করছে তুরস্কের ভাগ্য   জার্মানিতে বছরে শতাধিক মসজিদে হামলা; উদ্বিগ্ন মুসলিমরা   বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের মহানায়ক!   ডুরান্ড লাইন! পাক - আফগান দ্বন্দ্বের রেড লাইন!   ত্রিপুরা ও বাংলার ঐতিহাসিক সম্পর্ক | পর্ব ২   ত্রিপুরার সাথে ইসলাম এবং বাংলাদেশের সহস্র বছরের যোগসূত্রের সন্ধানে!   আসামের বর্তমান পরিস্থিতি!   আসামে ইসলামের আগমন ও এন আর সি ক্রাইসিস।   নবাব নুর উদ্দিন মুহাম্মদ বাকের জং। ইতিহাসে ঠাঁই না পাওয়া বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব!   প্রাক-ইসলামিক আরব। ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি।   ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের অবিচ্ছিন্ন জলপথ আবিষ্কার।   আফ্রিকার বুকে পর্তুগীজ কলোনি স্থাপনের ইতিহাস।   পূর্ব আফ্রিকায় পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপন, শোষণ ও ফলাফল   ধর্ষণের আলামত যেভাবে পরীক্ষা করা হয়।   মেটাভার্স   বাংলাদেশের সাথে সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে চায় তুরস্ক   লিবারেলিজম।   ইউরোপে ইসলাম বিদ্বেষের উত্থান।    পাকিস্তানে ইসলামী দল, তেহরিক-ই-লাব্বাইক নিষিদ্ধের ঘোষণা।   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব- ১১। নেতৃত্বের যোগ্যতা ও ব্যর্থ নেতৃত্ব।   ২০২০ সালের দিল্লি সহিংসতা ছিল একটি সংগঠিত, পরিকল্পিত ‘প্রোগ্রাম’। এবং কেন?   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৭   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৬   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৫   ২০০২ সালের গুজরাট গণহত্যা ও নরেন্দ্র মোদি   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৪   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৩   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-২   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-১   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব- ১০   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৯   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৮   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৭   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৬   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৫   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৪   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৩   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-২   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-১   রিবা নির্মূল হতে পারে সীরাতের পন্থায়!   ১৯৯১ সালে কাশ্মীরের কুনান ও পোশপোরায় গণধর্ষণ। আজও বিচার হয়নি।   নজরদারি: ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত’   ব্যবসার সঙ্গে অন্য সংস্কৃতিকে যুক্ত করার এজেন্ডা!

মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৮

১৭ নভেম্বর ২০২০ ১১:১৬ অপরাহ্ণ

    শেয়ার করুন

আমি প্রতিটি পর্বের মতো এই পর্বেও তার চিন্তাকে আমাদের সময়কালের সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। অনেক সময় খালদুন তার লেখায় শুধু মরুভূমি শব্দ ব্যাবহার করলেও আমি সাথে গ্রাম শব্দ যুক্ত করেছি। বা খাবারে ভাত যুক্ত করেছি। এভাবে প্রাসঙ্গিক শব্দ ও বাক্যাংশ যুক্ত করেছি প্রয়োজনমত। এটা সরাসরি অনুবাদ নয়। যদিও বেশিরভাগ কথাই উনার বইয়ের অনুবাদ। তবে মূলত উনার আইডিয়াকে আমি আমার মধ্যে ইচ্ছেমত ডানা মেলার সুযোগ করে দিয়েছি।

 

আলোচনাটি ইউটিউবে শুনুনঃ https://youtu.be/VqKDb6k_i9k

ইবনে খালদুন আলোচনা করছিলেন, বিভিন্ন অঞ্চলভেদে খাবারের প্রাচুর্যতা এবং ঘাটতির ভিন্নতা নিয়ে। এবং সেটা কীভাবে মানবদেহ এবং এর চরিত্রকে প্রভাবিত করে থাকে। যেমন, সকল অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে খাবার থাকে না। বা সকল এলাকার বাসিন্দাই আরামদায়ক জীবনযাপন করে না। কিছু অংশে, বাসিন্দারা প্রচুর শস্য, মৌসুমী গম এবং ফল উপভোগ করেন। কারণ মাটি গাছগুলির পক্ষে সুষম এবং অনুকূল। আর তাই ঐসব স্থানে প্রচুর সভ্যতা গড়ে উঠে। অন্যদিকে, অন্যান্য এলাকায়, জমি থাকে পাথুরে। সেসব স্থানে কোন বীজ বা গুল্ম একেবারেই বৃদ্ধি পায় না। সেখানকার বাসিন্দাদের খুব কঠিন জীবন পার করতে হয়। এই জাতীয় জনবসতির উদাহরণ যেমন হিজাজ এবং ইয়েমেনের বাসিন্দা। বা মাগরিবের (মরক্কো, মৌরিতানিয়া) মরুভূমিতে বসবাসকারী। বা পরিত্যক্ত মরু অঞ্চলে বসবাসকারী যাযাবর আরব। এদের সকলের কাছে শস্য, মসলা ইত্যাদি অপ্রতুল হয়ে থাকে। হ্যা তারা পাহাড়ি এলাকার লোকদের থেকে তা সংগ্রহ করতে পারে, কিন্তু সেটা খুবই সামান্য হয়ে থাকে। একটি স্বাচ্ছন্দ্যজনক জীবনের জন্য তা মোটেই পর্যাপ্ত হয় না। ইবনে খালদুন বলেনঃ এত কমতি থাকার পরেও "The desert people who lack grain and seasonings are found to be healthier in body and better in character than the hill people who have plenty of everything. Their complexions are clearer, their bodies cleaner, their figures more perfect, their character less intemperate, and their minds keener as far as knowledge and perception are concerned." অর্থাৎ - "তা সত্ত্বেও, মরুভূমির লোকেরা যাদের শস্য এবং মসলা ইত্যাদির অভাব রয়েছে, তারা পাহাড়ের লোক যাদের সবকিছু আছে তাদের চেয়ে সুঠামদেহের অধিকারী এবং চরিত্রিকভাবে ভাল হয়ে থাকে। তাদের সুন্দর অবয়ব, তাদের দেহ পরিষ্কার, তাদের ফিগার হয় আরও নিখুঁত। তাদের চরিত্রে উগ্রতা কম থাকে। এবং জ্ঞান-বুদ্ধি, কমন সেন্স বা পারসেপশনে তারা অনেক বেশি সচেতন হয়ে থাকে।" সাধারণভাবেই আমরা দেখি গ্রামের মানুষদের মধ্যে এরকম কোয়ালিটি বেশি থাকে। তারা সহজ সরল হয়। এবং তাদের জ্ঞান-বুদ্ধি প্রখর হয়ে থাকে। যে এলাকায় শহরের আবহাওয়া যতো কম লেগেছে, মানুষের মধ্যে পিউরনেস ততো বেশি বজায় থেকেছে। শহরের দূষিত বাতাস মন মগযে কম দূষণ লাগাতে পেরেছে। সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের মাঝে এর প্রভাব দেখা যায়। সেই ব্যাক্তি কোন আমির হোক বা গরীব, নেতা কিংবা অনুসারী, আলেম কিংবা সাধারণ মানুষ।

মরক্কোর একটি ঘটনা আমি আপনাদেরকে বলি। ২০১৭ সালে মরক্কো সফরে গিয়েছিলাম কিছুদিনের জন্য। তো ভাবলাম একটা সফর করবো এককালের মুরাবিতুনদের শহর যাগুরাতে। এককালে পাহাড়ের ঐপাশের মরুভূমি থেকে রুক্ষ মরুচারীরা উঠে এসে দখল করে নিয়েছিল আরাম আয়েশে থাকা এ পাশের মানুষের ভূমি। দীর্ঘ যাত্রায় ওয়ারজাজাত হয়ে যাগুরা পৌছুতে বেশ যাক্কি পোহাতে হয়েছিল। কিন্তু যাত্রাপথে ও শহরে চলাফেরায় মানু্ষের আচরণ এইসব যাক্কি ঝামেলাকে বাতাসে মিলিয়ে দেয়। ভাবছিলাম, মানুষ এতো সহজ সরল ও ভালো হয় কিভাবে। মরুভূমির পাশের একটি শহরে সম্পূর্ণ একা ও অপরিচিত। কিন্তু কখনো অনিরাপত্তাবোধ জাগ্রত হয়নি। মনে হল এমন অনেক স্থান আছে যেখানে বিদেশী কাউকে প্রটেকশন ছাড়া পেলে মানুষ ছিড়ে-খুরে খেয়ে ফেলতো। কমপক্ষে ছিনতাই তো হত। এই মরক্কোতেই এই বছরের প্রথম দিকে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম। মারাকেশ থেকে আওজুদ ড্রাইভ করছি। পথে মরুভূমি ও এটলাস পর্বতমালা। দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানোর পরে ভাবলাম একজায়গায় বসে কিছুটা জিড়িয়ে নেই। চারিদিকে পাহাড়-পর্বত। কিছুক্ষণ পরে যখন গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিলাম, স্টার্ট হলো না। গাড়ি কোন আওয়াজই করছে না। মহা বিপদ। মনে হচ্ছিল জনমানবহীন এক স্থানে আটকে গেছি। হঠাত এক দুটি গাড়ি যাচ্ছে। পেছনে যে বাজার ফেলে এসেছি, মনে পড়ে সেটা বেশ দূরে হবে। পর্বত ঘেরা এক নির্জন রাস্তায় একজন বিদেশি আটকে গেছে, সেখানে অনেক দূর্ঘটনার সম্ভাবনাই রয়েছে। গাড়ি স্টার্ট করার কোন উপায় না পেয়ে হেজার্ড লাইট জালিয়ে হাত তুললাম। একটা গাড়ি আসছে। আমার হাত তোলা দেখে থেমে গেল। একজন ট্যাক্সি ড্রাইভার। সাথে কয়েকজন প্যাসেঞ্জার। উনি গাড়ি চেক করে বললেন গাড়ির পেছনে ধাক্কা দেওয়ার জন্য। উনি স্টার্ট দেওয়ার চেষ্টা করবেন। গাড়িতে প্যাসেঞ্জার হিসেবে থাকা যুবক ও মুরব্বিরা ধাক্কা দিলেন। ঐ ট্যাক্সি ড্রাইভার আরো একটা ছোটা মিনিবাস থামিয়ে ড্রাইভারকেও ধাক্কা দেওয়ায় শরীক করালেন। আমি এই ভেবে আশ্চর্য হচ্ছিলাম যে, ট্যাক্সি ড্রাইভার নিজের পরবর্তী ট্রিপের কথা চিন্তা না করে আমাকে সাহায্য করছেন। সাথে প্যাসেঞ্জাররাও কেউ বলছেন না, যে উনাদের কাজ আছে, যেতে হবে, এখানে সময় নষ্ট হচ্ছে ইত্যাদি। গাড়ি স্টার্ট হওয়ার পর আমি ঐ ট্যাক্সি  ড্রাইভারকে এর জন্য টাকা অফার করি। কিন্তু তিনি সেটা নেননি। পরিস্থিতি এমন ছিল যে তাকে টাকা অফার করতেই লজ্জা লাগছিল। এই ঘটনা আমাকে অনেক শিক্ষা দিয়েছে। বুঝেছিলাম মানবতা এখনো বেচে আছে। মরুভূমির প্রান্তে বসবাসকারী এইসব লোকেরা শহরের দূষণ থেকে মুক্ত আছে। তারা হিংস্র নয়, মানবিক। বাজার-সদাই করতে অনেক দুরের বাজারে তাদেরকে যেতে হয়। শহরের লোকদের মতো ফ্লাটের নীচে সবধরনের খাবারের মজুদ নেই। সুতরাং তাদের খাবারের পরিমাণ হয় স্বল্প। এতে করে তাদের শরীর ও গঠনের সাথে সাথে মনও অসুন্দরভাবে গড়ে উঠে না। ভূড়ি বের হয়ে নাদুস নুদুস অবয়ব ধারন করে না। বা অন্তর কুৎসিত রুপ নেয় না।  

আর তাই ইবনে খালদুন বলেছেনঃ প্রচুর পরিমাণে খাবার এবং এতে থাকা আর্দ্রতা দেহে ক্ষতিকারক পদার্থ তৈরি করে। দেহকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্রশস্ত করে। অনেকপ্রকারের ধাতুর জন্ম হয়। ফলে তা একটি ফ্যাকাশে বর্ণের অসুন্দর ফিগার তৈরি করে। একজন ব্যক্তির শরীরে অতিরিক্ত মাংস থাকায় সেটা হয়। ইবনে খালদুন বলেনঃ When the moisture with its evil vapours ascends to the brain, the mind and the ability to think are dulled. The result is stupidity, carelessness, and a general intemperance. অর্থাৎঃ 'যখন এই আর্দ্রতা তার অশুভ বাষ্প সহ মস্তিষ্কে আরোহণ করে, চিন্তা করার ক্ষমতা তখন হ্রাস পায়। মন মগজ নিস্প্রভ হয়ে পড়ে। ফলাফল হল বোকামি, অসতর্কতা। এবং সাধারণভাবে অসংযমতা।'

লাক্সারিতে থাকা মানুষের চিন্তার ক্ষমতা কিভাবে হ্রাস পায় সেটা আমরা বর্তমানের সমাজের দিকে তাকালে দেখতে পাবো। সাধারণ মানুষের কথা বাদ দিলাম। তারা সবসময় সাধারণই থাকেন। কিন্তু চিন্তাশীল, বুদ্ধিজীবী ও সমাজের নেতৃস্থানীয়দের ব্যাপারে একটু ভাবুন। যাদেরকে শিক্ষিত ভাবা হয়, তাদের চিন্তার অক্ষমতা ভাবিয়ে তুলে। যেমন ঢাকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক জিয়া হাসানের ব্যাপারটাই ধরুন। তিনি নিজেকে মুসলিম দাবি করেছেন। অথচ তার কথা থেকে যতটুকু বুঝা গেল ইসলামের প্রাথমিক ধারনাটাও তার মধ্যে নেই। ধরে নিলাম, ইচ্ছে করেই স্টাডি করেননি। কিন্তু একজন ব্যাক্তিত্ববান ও গবেষণায় থাকা একজন ব্যক্তি কোন একটি বিষয়ে বেফাস, শোনা কথা হুট-হাট করে বলে দিতে পারেন না। যদিনা তার চিন্তার ক্ষমতা লোপ পেয়ে থাকে। স্টুপিডের মতো মন্তব্যও করতে পারেন না। দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ একটি বিদ্যাপিঠের একজন শিক্ষকের যদি এই দশা হয়ে থাকে তাহলে ছাত্রদের, সাংবাদিকদের ও শিক্ষিত শ্রেণীর লোকদের কি দশা হতে পারে!  

চিন্তার ক্ষমতা হারিয়েছেন লাক্সারি ও আরাম আয়েশে থাকা আমাদের অনেক দায়ীরা। তারা ইসলামের কথা বলেন। কিন্তু চিন্তা করে বলেন না। বরং শুধুই বাতাসে ঘুরে বেড়ানো নেরেটিভ রিপিট করে যান। একজন দায়ীর কাছে একসেস পেতে যখন বিশাল অংকের টাকা খরছ করতে হয়। একটি সেলফি তুলতে বিশাল ধাক্কাধাক্কি করতে হয়। দায়ী কোথাও ওয়াজে গেলে হাজার হাজার টাকা দিয়ে বুকিং দিতে হয়। হেলিকপ্টারে আনতে হয়। বিজনেস ক্লাসে টিকেট দিতে হয়। দামি হোটেলে রাখতে হয়। দামি রেষ্টুরেন্টে থেকে খাবার এনে দিতে হয়। শিডিউল মেনে চলতে হয়। যখন দাওয়াতের চেয়ে সেলিব্রিটি শোডাউন বেশি হয়। তখন বুঝাই যায় যে দায়ী অনেক লাক্সারিতে আছেন। আর ইবনে খালদুন যেমন বলেছেন, লাক্সারিতে থাকা লোকের চিন্তার ক্ষমতা লোপ পায়। ঠিক তাই। সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার খেয়ে খেয়ে বর্তমানকালের ছোট-বড় দায়ীদের চিন্তার ক্ষমতা লোপ পেয়েছে। তারা উপরে যাই দেখেন সেটাই রসিয়ে বর্ননা করে যান। এমন বর্ণনা যা তাদের লাক্সারিতে প্রভাব ফেলতে পারে, সেটা তারা করেন না। আর কেনই বা তারা এমন চিন্তা করতে যাবেন, যে চিন্তা তাদের সুস্বাদু খাবার পেতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। আবার কেউ চিন্তা করতে নেমে পড়ে মগজে থাকা দূষিত আর্দ্রতার কারনে কনস্পাইরিসি থিউরি বা অযৌক্তিক ও অপ্রমাণিত তথ্যের ভোক্তা ও প্রবক্তা হয়ে যান। স্টুপিডের মতো কাজ করে বসেন। এই যেমন ধরেন কোর'আন ও সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াস এইসবের নীতির আলোকে প্রতিষ্টিত একটি সত্য বিষয়কে হয়তো এমন একজন দায়ী অস্বীকার করে বসলেন। বা এর বিপরীতে কাজ করলেন। যা সাধারণ মানুষের ব্রেইনে ধরছে না। প্রশ্ন হল কেন, কিভাবে একজন জ্ঞানি ও দায়ী এমন করতে পারেন। এর উত্তর ইবনে খালদুনেরর কথাগুলো। এবং এসবই এর বাস্তব প্রমান দেয়। তাদের এই স্টুপিডিটি প্রাকৃতিক। সুস্বাদু খাবার আর লাক্সারিতে যারা ডুবে দাওয়াত দিচ্ছেন তাদের মগজে যখন এইসব খাবারের দুষিত বাতাস পৌছে তখন তারা স্টুপিডের মতো কথা বলেন, বা কাজ করেন। দেখবেন, পরিস্কার দলিলকে মাসলাহা-মাফসাদার ধোহাই দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়।

খালদুন বলেছেন, আমরা দেখতে পাই যে উর্বর অঞ্চলগুলির বাসিন্দারা- যেখানে কৃষিজাত পণ্য এবং পশুপালনের পাশাপাশি মওসুমী ফল ও মসলা প্রচুর পরিমাণে হয়ে থাকে - এর বাসিন্দারা সাধারণত চিন্তায় স্টুপিড ও গঠনে অসুন্দর হয়ে থাকে। প্রচুর পরিমান খাবার যেমন শরীরে দূষিত পদার্থ তৈরি করে শরীরের ক্ষতি করে, বিপরীতে ক্ষুধা ব্যাপকভাবে শরীর ও এর গঠনের উন্নতিতে সাহায্য করে। আর তাই শহরের লোকদের চেয়ে গ্রামের, মরুভূমির লোকেরা বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিকভাবে শ্রেষ্ঠ হয়ে থকে। তাদের প্রধান খাবার হয়ে থাকে মাংস ও চিকেন। যাতে তারা মাখন ব্যাবহার করেন না। এ কারনে তাদের খাবারের আর্দ্রতা থাকে সামান্য, এবং এটি তাদের দেহে কেবলমাত্র কয়েকটি ক্ষতিকারক বিষয় আনতে পারে। ফলস্বরূপ, কঠোর জীবনযাপনকারী মরুভূমির বাসিন্দাদের তুলনায় শহুরে জনগোষ্ঠী অত্যন্ত নাজুক হয়ে থাকে। অন্যদিকে মরুভূমি ও গ্রামের যে সমস্ত বাসিন্দা ক্ষুধার্ত থাকাতে অভ্যস্ত, তাদের শরীরে কোন অতিরিক্ত মেদও দেখা যায়। 

এটা জানা উচিত যে দেহের উপর প্রাচুর্যের যে প্রভাব সেটা এমনকি দ্বীনের ক্ষেত্রে ও ধর্ম-কর্ম পালনেও প্রভাব ফেলে। মরুভূমি ও এমন বসতির লোক যারা সংযত জীবনে অভ্যস্ত এবং যারা উপোস থাকা ও আরামদায়ক জীবন থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখাটাকে অভ্যাসে পরিণত করেছে, তাদেরকে দেখা গেছে প্রাচুর্যে বাসকারী লোকদের চেয়ে বেশী ধার্মিক ও দ্বীনের বানী গ্রহনে বেশি প্রস্তুত থাকেন। এ কারনে দেখা গেছে যে শহর এবং নগরে খুব কম ধর্মীয় মানুষ থাকেন। কারণ সেখানে বেশিরভাগ লোকই স্বচ্ছল ও অসতর্ক। যারা প্রচুর মাংস, মসলা, ও মিহি আটা-ময়দা (ও চাল) খেয়ে থাকেন। তাই ধার্মিক পুরুষ এবং তপস্বীদের অস্তিত্ব মূলত (গ্রাম) ও মরুভূমিতেই সীমাবদ্ধ, যার বাসিন্দারা খাবারে থাকে সংযত। এমনিভাবে, একই শহরের মধ্যকার বাসিন্দাদের বিলাসিতা এবং প্রাচুর্যের ভিন্নতার কারনে অবস্থার ভিন্নতা হতে পারে। এটিও লক্ষ্য করা যায় যে, সেইসব লোক, যারা প্রাচুর্যের মধ্যে থাকে এবং  যাদের সকল প্রকার ভালো ভালো জিনিস খাওয়ার একসেস থাকে, তারা মরুভূমি বা শহরের বাসিন্দা হোক সেটা ধর্তব্য নয়, কোন দুর্ভিক্ষ বা (মহামারি) আসলে অন্যদের আগে তারা দ্রুতই মারা যায়। বর্তমান পরিস্থিতির কথাই ভাবুন না একটু। করোনার কারনে যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল তারা মারা যাচ্ছেন দ্রুত। খাবারে যারা একেবারে সিম্পল। যেমন শুধু খেজুর আর পানি, বা শুধুই বার্লি বা যব এবং অলিভ অয়েল ইত্যাদি। তারা শারীরিকভাবে শক্তিশালী হয়ে থাকেন। যখন খরা বা (মহামারি) আঘাত হানে, তখন তা প্রাচুর্যে থাকা লোকদের মতো তাদেরকে সেভাবে মেরে ফেলতে পারে না। 

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

কুরবানি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিধান। মুফতি শরীফ মোহাম্মদ সাঈদ

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লন্ডনে সিম্পল রিজনের অফিস পরিদর্শন করলেন মুফতি সাইফুল ইসলাম

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লিডসে শায়েখে বাঘা রহঃ-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লন্ডনের সভায় আলেমরা বি এ এস বি কমপ্লেক্সকে সহযোগিতার আহবান জানালেন।

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বইঃ বশীর আহমদ শায়খে বাঘা রহঃ

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বার্মিংহামে শায়েখে বাঘা রহঃ জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বায়রাক্তার টিবি২ দীপ্তিমান করছে তুরস্কের ভাগ্য

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

জার্মানিতে বছরে শতাধিক মসজিদে হামলা; উদ্বিগ্ন মুসলিমরা

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের মহানায়ক!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ডুরান্ড লাইন! পাক - আফগান দ্বন্দ্বের রেড লাইন!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ত্রিপুরা ও বাংলার ঐতিহাসিক সম্পর্ক | পর্ব ২

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ত্রিপুরার সাথে ইসলাম এবং বাংলাদেশের সহস্র বছরের যোগসূত্রের সন্ধানে!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

পূর্ব আফ্রিকায় পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপন, শোষণ ও ফলাফল

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

আফ্রিকার বুকে পর্তুগীজ কলোনি স্থাপনের ইতিহাস।

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের অবিচ্ছিন্ন জলপথ আবিষ্কার।

the global affairs google play logo the global affairs apple logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হোসাইন আহমদ

info@theglobalaffairs.info