সর্বশেষ
  কুরবানি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিধান। মুফতি শরীফ মোহাম্মদ সাঈদ   লন্ডনে সিম্পল রিজনের অফিস পরিদর্শন করলেন মুফতি সাইফুল ইসলাম   লিডসে শায়েখে বাঘা রহঃ-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত   বার্মিংহামে শায়েখে বাঘা রহঃ জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত   লন্ডনের সভায় আলেমরা বি এ এস বি কমপ্লেক্সকে সহযোগিতার আহবান জানালেন।   বইঃ বশীর আহমদ শায়খে বাঘা রহঃ   বায়রাক্তার টিবি২ দীপ্তিমান করছে তুরস্কের ভাগ্য   জার্মানিতে বছরে শতাধিক মসজিদে হামলা; উদ্বিগ্ন মুসলিমরা   বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের মহানায়ক!   ডুরান্ড লাইন! পাক - আফগান দ্বন্দ্বের রেড লাইন!   ত্রিপুরা ও বাংলার ঐতিহাসিক সম্পর্ক | পর্ব ২   ত্রিপুরার সাথে ইসলাম এবং বাংলাদেশের সহস্র বছরের যোগসূত্রের সন্ধানে!   আসামের বর্তমান পরিস্থিতি!   আসামে ইসলামের আগমন ও এন আর সি ক্রাইসিস।   নবাব নুর উদ্দিন মুহাম্মদ বাকের জং। ইতিহাসে ঠাঁই না পাওয়া বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব!   প্রাক-ইসলামিক আরব। ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি।   ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের অবিচ্ছিন্ন জলপথ আবিষ্কার।   আফ্রিকার বুকে পর্তুগীজ কলোনি স্থাপনের ইতিহাস।   পূর্ব আফ্রিকায় পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপন, শোষণ ও ফলাফল   ধর্ষণের আলামত যেভাবে পরীক্ষা করা হয়।   মেটাভার্স   বাংলাদেশের সাথে সামরিক সহযোগিতা বাড়াতে চায় তুরস্ক   লিবারেলিজম।   ইউরোপে ইসলাম বিদ্বেষের উত্থান।    পাকিস্তানে ইসলামী দল, তেহরিক-ই-লাব্বাইক নিষিদ্ধের ঘোষণা।   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব- ১১। নেতৃত্বের যোগ্যতা ও ব্যর্থ নেতৃত্ব।   ২০২০ সালের দিল্লি সহিংসতা ছিল একটি সংগঠিত, পরিকল্পিত ‘প্রোগ্রাম’। এবং কেন?   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৭   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৬   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৫   ২০০২ সালের গুজরাট গণহত্যা ও নরেন্দ্র মোদি   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৪   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-৩   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-২   দ্যা রুম হোয়ার ইট হ্যাপেনড। বই রিভিউ। পর্ব-১   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব- ১০   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৯   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৮   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৭   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৬   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৫   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৪   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-৩   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-২   মুকাদ্দিমাহ রিভিউ। পর্ব-১   রিবা নির্মূল হতে পারে সীরাতের পন্থায়!   ১৯৯১ সালে কাশ্মীরের কুনান ও পোশপোরায় গণধর্ষণ। আজও বিচার হয়নি।   নজরদারি: ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত’   ব্যবসার সঙ্গে অন্য সংস্কৃতিকে যুক্ত করার এজেন্ডা!

প্রাক-ইসলামিক আরব। ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি।

২৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:০১ অপরাহ্ণ

    শেয়ার করুন

আরব বিশ্ব প্রধানত ইসলামের মাধ্যমে পরিচিত এবং এর যৌক্তিক কারণও আছে। ইতিহাসে আরববাসীর স্থান করে নেওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুঘটক ছিল ইসলাম। সে সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী সাম্রাজ্য - ইসলামি খিলাফত - প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত করেছিল ইসলাম, যা তার স্পেন এবং উত্তর আফ্রিকা থেকে পশ্চিমে মধ্য এশিয়া এবং পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। খিলাফত বিশ্বের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক, সামরিক, বৈজ্ঞানিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়, এদিকে ইসলাম ধর্মও বিশ্বব্যাপী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি হিসেবে রয়ে গেছে।  কিন্তু ইসলামের আগে আরবের অবস্থা কী ছিল?  আরবের লোকেরা কীভাবে জীবনযাপন করত? কীভাবে নিজেদের শাসন কাজ চালাত? তারা কী বিশ্বাস করত? ইসলাম-পূর্ব আরবের হালচাল নিয়ে আমাদের আজকের ভিডিওতে স্বাগতম।

ইতিহাস প্রায়শই জটিল হয়। প্রাক-ইসলামি যুগে আরবিরা অধিকাংশই যাযাবর ছিল। তারা গোত্রীয়ভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছুটে বেড়াত। এই বেদুইন উপজাতিদের মধ্যে কিছু কিছু গোত্র আজ পর্যন্ত তাদের ঐতিহ্যবাহী যাযাবর জীবনধারা বজায় রেখে চলেছে। ক্রমাগত জোট পরিবর্তন, অবিরাম যুদ্ধ, এবং সংগঠিত ও কেন্দ্রীভূত রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য তারা হয়ে উঠেছিল আরব উপদ্বীপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি। এই উপজাতিরা আত্মীয় ও পরিবারের বিষয়াদিতে বেশ জোর দিত। গবাদি পশু, প্রধানত ভেড়া, ছাগল এবং উট নিয়ে তারা ঘুরে বেড়াত। তারা পরিবারের আপনজনদের সাথে তাঁবুতে বাস করত।

তাদের নেতারা বেদুইন সমাজের অলিখিত নিয়মের আলোকেই সমাজ চালাত। বেদুইনরা ছিল পুরুষতান্ত্রিক। তাদের উত্তরাধিকার ছেলে সন্তানরা লাভ করত। মেয়েরা সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারত না। কার্যত তারা অধিকারহীন ছিল। তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মালামালের মতোই আটক রাখা হতো। নিজেদের আইন অনুযায়ী বন্দীদের বিয়ে করার অনুমতি ছিল তাদের জন্য। পুরুষদের জন্য বিয়ে করার কোনো সংখ্যা নির্ধারিত ছিল না। যখন একজন লোক মারা যেত, তার ছেলে নিজের গর্ভধারিণী মা ছাড়া মৃত বাবার সমস্ত স্ত্রীদের উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করত। উপজাতীয় আরবের নারীদের তাদের বিয়েতে মত প্রকাশের অধিকার ছিল না বললেই চলে। তারা প্রায়শই পুরুষ এবং নারীর পরিবারের মধ্যে বিয়ে নিয়ে আগেই কথাবার্তা পাকা করে রাখত। উট, ঘোড়া বা অন্যান্য উত্তরাধিকার-সম্পত্তির মতোই তারা স্ত্রী পেত। এছাড়াও নারী ও শিশু হত্যার ঘটনাও ঘটেছে অহরহ। যেমন, মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনে উল্লেখ আছে, জাহিলি সমাজের আরবরা তাদের মেয়েদের জীবিত কবর দিত।

বেদুইন পুরুষরা সাধারণত নারীদেরকে অর্থনৈতিক বোঝা এবং যাবতীয় অনিষ্টের উৎস বলে মনে করত। কারণ শত্রু বাহিনীর হাতে মহিলাদের বন্দী হ‌ওয়া সমাজের রক্ষণশীলদের কাছে একটা অপমানজনক বিষয় বলে বিবেচিত হতো।

দুই একটা ব্যতিক্রম ছাড়া কেন্দ্রীয় শক্তির অনুস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষকে রক্ষার জন্য কোনো লিখিত আইন, আদালত ছিল না। ছিল না আইন প্রয়োগ করার মতো কোনো কর্তৃপক্ষ।

একইভাবে, একটি বেদুইন গোত্রের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, তার সদস্যদের রক্ষা করা। অন্য কোনো গোত্রের হাতে নিহত সদস্যের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া। এ কারণে তারা  ক্রমাগত যুদ্ধ ও দ্বন্দ্বের দিকে ঝুঁকে পড়ত।

নিজ গোত্র ও নিজ আত্মীয়দের হেফাজত করা অত্যন্ত সম্মানজনক কাজ হিসেবে বিবেচনা করত তারা। আরব উপদ্বীপের কষ্টকর জীবনযাপন গোত্রীয় ব্যবস্থা এবং একটি সুশৃঙ্খল গোত্র গড়ে তোলার পেছনে অত্যন্ত সহায়ক ছিল। কেননা প্রায়শই নিজেদের সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে তাদেরকে নামতে হতো জীবন-মৃত্যুর মধ্যখানে।

ফরাসি ইতিহাসবিদ ম্যাক্সিম রডিনসন বলেছেন, মুক্ত আরবরা কোনো লিখিত আইন ও বিধিবিধান মানতো না। এমন কোনো প্রতিরক্ষা বাহিনীও ছিল না, যারা রাষ্ট্রে আইন প্রয়োগ করবে। একজন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ছিল ঐইটুকুই, যেটুকু তারা বংশগত রীতি হিসেবে মেনে চলতো। রক্তের বিনিময়ে রক্ত এবং জীবনের বিনিময়ে জীবন - এটাই ছিল তাদের আইন। আরবি ভাষা ছিল বেদুইন সমাজের অন্যতম স্তম্ভ।

অস্ট্রিয়ার ইতিহাসবিদ গুস্তাভ-ই-ভন গ্রুনেবাউম এই কথারই পুনরাবৃত্তি করে বলেছেন, ইসলাম-পূর্ব সময়ে আরবরা পরস্পর গোত্রীয় গেরিলা যুদ্ধে ব্যস্ত থাকত।
বিভিন্ন গোত্র একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করত, আক্রমণ করত এবং কাফেলা ও বসতিগুলো লুণ্ঠন করত।

আইনহীনতাই ছিল সে দেশের আইন। সফরকারী এবং স্থায়ী বাসিন্দারা আক্রমণ এড়াতে ছুটে বেড়ানো বেদুইন গোত্রের প্রতি সম্মান জানাত। যদিও আরবের বেশিরভাগ গোত্র তাদের যাযাবর জীবনযাপনই করছিল, তবে কেউ কেউ নির্দিষ্ট অঞ্চলের ওপর প্রভাব বিস্তার করা এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করাও শুরু করেছিল। মক্কা কার্যত কুরাইশ গোত্রের দক্ষ বণিকদের দ্বারা শাসিত হতো।‌ তারা ৫ম শতাব্দীর কোনো এক সময় শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এই সময় ইয়াসরিব তথা মদিনায় আরব গোত্র আউস এবং খাজরাজ এবং ইহুদি গোত্র নাজির, কাইনুকা এবং কুরাইজা আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত ছিল। যাযাবর বেদুইন জাতি স্থায়ীভাবে বসবাসের জীবনকে অবজ্ঞার সাথে দেখতো এবং শহরবাসীদেরকে দোকানদার বা বণিক-জাতি হিসাবে ডাকতো। মক্কার মতো শহরগুলোর অভ্যুদয় প্রাক-ইসলামি যুগে সাধারণ আরব সম্প্রদায়ের উত্থানের প্রাথমিক কারণ ছিল।

আরব উপদ্বীপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর মক্কা ও মদিনা হিজাজে অবস্থিত। পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা আছে এ অঞ্চল দু'টিতে। এ শহরদ্বয়ের কারণেই আরবে জীবনযাপন খানিকটা সহজ হতো। এছাড়া অন্যসব জায়গায় বসবাস করা বেশ কঠিন ছিল। মক্কা ছিল এই অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। এটি ছিল এমন একটি অঞ্চল, যার মধ্য দিয়ে বাণিজ্য-কাফেলা চলাচল করতো। সেই সাথে এখানে ছিল ইসলামের পবিত্র স্থান কাবার অবস্থান, যা বহুঈশ্বরবাদী আরবেও পবিত্র স্থান হিসেবে গণ্য হতো। সেসময়ে কাবায় বিভিন্ন আরবি উপজাতি এবং দেবতাদের মূর্তি ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৬০ থেকে ৩০-এর মধ্যে বাস করা গ্রিক ইতিহাসবিদ ডিওডোরাস সিকুলাস তার কাজ বিবলিওথেকা হিস্টোরিকায় আরবের বিচ্ছিন্ন অঞ্চল সম্পর্কে লিখেছিলেন। তিনি কাবাকে অত্যন্ত পবিত্র একটি উপাসনালয় হিসাবে বর্ণনা করেছেন। সমস্ত আরবিরা কাবাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করত। উদাহরণস্বরূপ, তারা কাবাকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে কুরাইশ গোত্রের ও‌ মক্কাবাসীর প্রধান দেবতা ছিল হুবালকে সেখানে রেখেছিল।

লোহিত সাগর এবং টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিসের মধ্য দিয়ে স্বাভাবিক বাণিজ্য পথগুলো জলদস্যুতা এবং রোমান-পারস্য দ্বন্দ্বের কারণে সমস্যায় পড়ত। মুসাফির ব্যবসায়ীরা মক্কার মধ্য দিয়ে যাওয়া বাণিজ্য পথে যাতায়াত করতো। লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে স্থানীয় বেদুইনরা  ব্যবসায়িক পণ্য মক্কায় আনত। এরপর এখান থেকে কাফেলা উটের মাধ্যমে তাদের পণ্যদ্রব্য পূর্বাঞ্চলে নিয়ে যেত। মক্কাবাসীরা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং বেদুইন গোত্রদের সাথে তাদের বাণিজ্যিক কাফেলা নিরাপদে অতিক্রম করার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে রাখত। কাবা শরীফের অবস্থিত থাকার কারণে বহুঈশ্বরবাদী আরবদের কাছেও মক্কার একটি ধর্মীয় তাৎপর্য ছিল। কারণ বছরে একবার সারা আরব থেকে আরবরা কাবাতে তীর্থযাত্রা করত এবং পবিত্র জমজম কূপ থেকে পানি পান করত। বছরের এই সময়ে সংঘর্ষ বন্ধ থাকত। তখন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হতো। বিরোধ এবং ঋণ সমাধান করা হতো। বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রমও চলতো।

এইভাবে মক্কা শহরের চারপাশে‌ বসবাসরত গোত্রসমূহের কাছে সংঘবদ্ধতার এক কেন্দ্রে পরিণত হয় মক্কা। বাইরে থেকে আসা অতিথিরা মক্কাযর আইনকানুন মানতে বাধ্য ছিল। মক্কার বাণিজ্য সম্ভাবনা এবং আরবদের জন্য এর ধর্মীয় তাৎপর্য তাদেরকে একত্রিত করতে এবং তাদের জাতীয় পরিচয় গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানে রূপ নেয়। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল ইয়াসরিব বা মদিনা। এটি হিজাজের উর্বর অঞ্চলে অবস্থিত। কৃষির জন্যও বেশ সহায়ক ছিল এ অঞ্চলটি। এতে শহরটি লোহিত সাগরের চারপাশে ভ্রমণকারী বাণিজ্য কাফেলাগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হয়ে উঠে। প্রাথমিকভাবে, ইয়াসরিব ইহুদি গোত্রদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে বেশ কয়েকটি আরব গোত্র ইয়াসরিবে আগমন করে এবং শহরে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব অর্জন করে ফেলে। আরবরা প্রধানত কৃষিকাজে নিয়োজিত থাকলেও ইহুদিরা ব্যবসায়ী হিসেবে সক্রিয় ছিল। শহরগুলোর উত্থান অনিবার্যভাবে বাণিজ্যের উত্থানকেও প্রভাবিত করেছে।

আর বাণিজ্যের উত্থান অনিবার্যভাবে সুদের ব্যাপক প্রচলন ঘটিয়েছে। সুদ এমন একটি প্রথা, যার সাথে আরব এবং ইহুদি উভয়ই জড়িত ছিল। পরবর্তীতে ইসলাম এই প্রথা নিষিদ্ধ করেছে।

আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি, প্রাক-ইসলামি আরবেও সাধারণ আত্মপরিচয় গঠনে‌ ধর্ম বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। ইসলামের উত্থানের আগে আরবরা কোন ধর্ম পালন করত? প্রাক-ইসলামি আরবে ধর্ম বলতে ছিল বহুঈশ্বরবাদ, খ্রীষ্টধর্ম, ইহুদি এবং ইরানী ধর্মের সংমিশ্রণ। বহুঈশ্বরবাদ বা পৌত্তলিকতা ছিল আরবের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিশ্বাস। প্রতিটি গোত্র, শহর এবং অঞ্চলের নিজস্ব ঈশ্বর বা প্রতিমা থাকত, যা ছিল এক‌ দিক থেকে সেই নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের পৃষ্ঠপোষক।

আরবরাও জিনের মতো অতিপ্রাকৃত প্রাণীতে বিশ্বাস করত। কাবাতে কল্পিত দেব-দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল। সামগ্রিকভাবে, অনুমান করা হয়, কাবাতে এই জাতীয় ৩৬০ টি মূর্তি এবং চিত্র ছিল। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য, ইথিওপিয়া, পারস্য এবং অন্যান্য প্রতিবেশী বাহিনীর সাথে বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আরবের ধর্মীয় দৃশ্যপট গঠনেও ভূমিকা রেখেছিল। খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীর প্রথম দিকে আরব ব্যবসায়ীরা খ্রীষ্টধর্মকে আরবে নিয়ে আসে। আরবে পলের মন্ত্রণালয়, সেন্ট থমাস এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের শক্তিশালী প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে পড়ে আরবিরা। উদাহরণস্বরূপ, রোমের একটি রাজ্য গাসসানি সাম্রাজ্য খ্রীষ্টধর্মে রূপান্তরিত হওয়ার পর দেশের দক্ষিণে নাজরান অঞ্চলে একটি শক্তিশালী খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়।

আর এই সবকিছু হয়েছিল ইথিওপিয়ান খ্রিস্টান রাজ্য আকসুমের প্রভাবের ফলে। নেস্টরিয়ান খ্রীষ্টধর্ম দেশের কিছু অংশে শক্তিশালী ছিল, কিন্তু সবচেয়ে জনপ্রিয় সম্প্রদায় ছিল মনোফিসিটিজম। ইহুদি ধর্মও আরবের ধর্মীয় দৃশ্যপটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল।

রোমানদের নিপীড়নের ফলে প্রথম শতাব্দীর প্রথম দিকে ইহুদিদের আরবে অভিবাসন শুরু হয়। অনেক ইহুদি হিজাজ এবং ইয়াসরিব, খাইবার, ফাদাক এবং উম্মুল কুরার মতো শহরে বসতি স্থাপন করে। অনেক আরব ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়। তবে ইহুদি অধ্যুষিত হিজাজ শহরে বসতি স্থাপনের জন্য তারা শর্তবদ্ধ ছিল।

ইয়েমেনি হিমারাইট সাম্রাজ্য চতুর্থ শতাব্দীতে ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়। মধ্য আরবে বাসরত হিমারাইট সাম্রাজ্যের উপজাতি কিন্দাহর কেউ কেউ ৫ম শতাব্দীর মধ্যে ধর্মান্তরিত হয়ে যায়।

বিভিন্ন উৎস থেকে ইবরাহিমি ধর্মের একক ঈশ্বরের উপাসনাকে কেন্দ্র করে একটি একেশ্বরবাদী ধর্ম সম্পর্কেও জানা যায়। কিন্তু দৃশ্যত, এটি খ্রীষ্টধর্ম বা ইহুদি ধর্মের সাথে যুক্ত ছিল না। সম্ভবত ইবরাহিম আ.-এর ভবিষ্যদ্বাণীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এ সম্প্রদায়। এই ধর্মের অনুসারীদেরকে 'হানিফ' বলা হতো। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ আরবদের প্রতিমাপূজা এবং পৌত্তলিকতা প্রত্যাখ্যান করেছিল। শুয়োরের মাংস নিষিদ্ধ করার মতো ইবরাহিম আ.-এর ধর্মের বেশ কিছু রীতিনীতি অনুসরণ করত। হানিফ জনগণের সম্প্রসারণের পরিধি অস্পষ্ট। কিন্তু কিছু ইসলামি সূত্র অনুসারে, ইসলামের নবী মুহাম্মদ সা. এবং তার ভবিষ্যৎ সঙ্গীদের মধ্যে কয়েকজন এই ধর্মের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। জরথুস্ট্রীয়ধর্ম, মাজদাকিজম এবং পারস্যের প্রভাবে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্যদের মতো ইরান ভিত্তিক ধর্ম অনুসরণ করে,  আরবের এমন একটি ছোট সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও ছিল।

প্রাক-ইসলামি যুগে আরব জাতীয়তাবাদ অনুপস্থিত ছিল। কেননা তারা এক স্থান থেকে আরেক স্থানে ছুটে বেড়াত। এ বিষয়টি আমরা আগেই উল্লেখ করেছি। কিন্তু গ্রিক, রোমান, মেসোপটেমিয়া এবং পারস্য উৎসে উল্লিখিত প্রাক-ইসলামি যুগে আরবে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ছিল। মৌখিকভাবে সংরক্ষিত আরব ঐতিহ্য পরবর্তীতে ইসলামি পণ্ডিতদের দ্বারা লিখিত আকারে সংরক্ষণ করা হয়।

ক্ল্যাসিকাল আরব লেখকের মতে, আরব নিজেদেরকে দুই ভাগে বিভক্ত করে, দক্ষিণ আরব তথা ইয়েমেন কাহতানের বংশধর এবং উত্তর আরব আদনানের বংশধর।

এটি আকর্ষণীয় যে, এই দু'টি দলের মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পার্থক্য ছিল। তাদের মধ্যে রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থারও অস্তিত্ব ছিল। দক্ষিণ আরবদের ইয়েমেনে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ছিল। সেখানে রাজতন্ত্র চালু ছিল।

উত্তর আরবে ছিল গোত্রীয় প্রথা। মক্কার মতো অন্যান্য শহর-রাষ্ট্রগুলো 'রাষ্ট্র'-এর প্রচলিত রূপের মতোই বিদ্যমান ছিল। এই জাতীয় রাজ্যগুলো একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে শাসিত হতো। বিকল্প হিসেবে মক্কার উত্থানের আগে এটি আরবে বাণিজ্যের মূল পথ ছিল বলে দক্ষিণকে আরও উন্নত বলে মনে করা হতো। এবং ইথিওপিয়ার মতো বহিরাগতদের সাথে বেশি যোগাযোগ ছিল। চতুর্থ শতাব্দী থেকে একটি বিপরীত প্রক্রিয়া শুরু হয়। কারণ অনেক দক্ষিণি গোত্র উত্তরে চলে যায় এবং উত্তরে প্রভাব বিস্তার করে। তারা দক্ষিণ আরব থেকে চলে গিয়ে উত্তর আরবে ছড়িয়ে পড়ে।

খ্রীষ্টপূর্ব ৮ম শতাব্দীর আসিরীয় সূত্র অনুসারে, সামুদ উপজাতি বা এইরূপ উপজাতীয় গোত্রগুলো আরবের প্রথম রেকর্ড করা রাষ্ট্রগুলোর অন্যতম। উত্তর পশ্চিম আরবের এক অন্যরকম ক্ষমতা ছিল তাদের। তবে পরবর্তীতে রোমান সূত্র অনুসারে রোমান সাম্রাজ্যের সহায়ক শক্তি হিসাবে তারা ব্যবহৃত হয়েছে।

খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে গ্রিক পণ্ডিত এরাতোস্থেনিস মিনায়ান, সাবায়ান, কাতাবানীয় এবং হাদ্রামাইটদেরকে আরব উপদ্বীপে বসবাসকারী প্রধান মানব শ্রেণি হিসেবে উল্লেখ করেন। ইতিহাসবিদরা বর্তমান ইয়েমেনে অবস্থিত স্বাধীন সাবায়ান রাজ্যের কথা উল্লেখ করেন, যা পরে ২৮০ খিষ্টপূর্বাব্দে হিমারাইটস রাজত্বের হাতে পরাজিত হয়। হিমারাইটস সাম্রাজ্য ছিল আরব উপদ্বীপের অন্যতম প্রাক-ইসলামি রাষ্ট্র। এটি রাজতন্ত্র দ্বারা শাসিত হতো। কিন্তু বাস্তবে রাষ্ট্রের ক্ষমতা আঞ্চলিক গভর্নরদের মাঝে ভাগ করা ছিল। তারা পূর্ণভাবে স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ পেত। এটি ছিল অনেকটা মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় সাম্রাজ্যের মতো একটি ব্যবস্থা। ৪র্থ শতাব্দীর প্রথম দিকে হিমারাইটস সাম্রাজ্য দক্ষিণ আরব শাসন করে এবং উত্তর দিকে নাজরান পর্যন্ত প্রসারিত হয়।

মূলত বহুঈশ্বরবাদী হিমারাইটরা চতুর্থ শতাব্দীর কোনো এক সময়ে ইবরাহিম আ.-এর রবের প্রতি বিশ্বাস রেখে একেশ্বরবাদী হয়ে ওঠে। ৫ম শতাব্দীর শেষে হিমারাইট রাজা আবু কারিবা ইহুদি ধর্মকে তাঁর বিশ্বাস হিসেবে গ্রহণ করে। তাঁর পুত্র ও উত্তরসূরি ইউসুফ জু নাওয়াস আরো উদ্যোগী হয়ে রাজ্যে বসবাসকারী খ্রিষ্টানদের ওপর অত্যাচার শুরু করে। ৫২৪ খ্রিষ্টাব্দে ইথিওপিয়ান কিংডম অফ আকসুম বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং দক্ষিণ আরবের খ্রিষ্টান জোটের কাছে পরাজিত হওয়ার পর জু নাওয়াস হয়তো নিহত অথবা আত্মহত্যা করায় এখানে হিমারাইট রাজবংশ অকার্যকর হয়ে পড়ে। এরপর খ্রিষ্টান ইথিওপিয়া দক্ষিণ আরবের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। তীর্থযাত্রীদের আকৃষ্ট করার জন্য ও মক্কার পরিবর্তে সানাকে বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় সানায় একটি গির্জা নির্মাণ করে।

এর ফলে ইয়েমেনে নিযুক্ত ইউরোপীয় রাজপ্রতিনিধি আবরাহার সাথে মক্কাবাসীর দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এর বিবরণ পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে। আবরাহা মক্কার বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধে হাতি ব্যবহার করেছিল। তবে সে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে। ৬ষ্ঠ শতাব্দীর দ্বিতীয় অংশটি হিমারাইট রাজ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণের জন্য ইথিওপিয়ান এবং সাসানিদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইয়ের জন্য উল্লেখযোগ্য। এ যুদ্ধে পারস্য সাম্রাজ্য সফল হয়েছিল।

আরবে আরেকটি বিশিষ্ট প্রাক-ইসলামি রাষ্ট্র ছিল - কিন্দা সাম্রাজ্য। এটি মধ্য আরবের প্রথম রাজ্য। পঞ্চম শতাব্দীর শেষের দিকে কিন্দা উপজাতি নাজদের সমস্ত উপজাতিকে একত্রিত করতে সক্ষম হয়। এভাবে এ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্দা সাম্রাজ্য উত্তর আরবের বাইজেন্টাইন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সফল সামরিক অভিযান পরিচালনা  করে। কিন্তু সাসানি সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে একই ধরনের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৫২৯ সালে পারস্যের লখমিদরা কিন্দা রাজা হারিস বিন আমরকে পরাজিত করে হত্যা করে। এর ফলে এ রাষ্ট্রের পতন হয়।

পূর্বে উল্লেখিত বনু লাখম উপজাতি দ্বারা পূর্ব আরবে উপরোক্ত লাখমিদ রাজ্যটি ৩য় ও ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

প্রাথমিকভাবে, স্বাধীন লাখমিদ সাম্রাজ্য সাসানীয় সাম্রাজ্যের উপকূলীয় শহরগুলোকে হুমকি দিচ্ছিল। ৩২৫ সালে সাসানি সম্রাট দ্বিতীয় শাপুর তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন।

শীঘ্রই লাখমিদ সাম্রাজ্যের রাজধানী হীরা সাসানীদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তারপর থেকে লাখমিদ সাম্রাজ্য সাসানীয় সাম্রাজ্যের উপনিবেশ হয়ে যায়, যতদিন না এটি সপ্তম শতাব্দীর প্রথম দিকে তাদের দ্বারা সংযুক্ত হয়। গাসসানি সাম্রাজ্যেরও একই পরিণতি হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে আজদ গোত্রের কিছু অংশ ইয়েমেন থেকে লেভান্টে চলে আসে এবং গোলান মালভূমিতে রাজধানী জাবিয়া সহকারে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের একটি উপনিবেশ হিসাবে গাসসানি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ইসলাম সম্প্রসারণের সময় গাসসানি সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব স্তিমিত হয়ে আসে। কিন্তু এই রাজ্যগুলোর কোনোটিই শক্তিশালী ছিল না। আরবদের এক রাজ্যে একত্রিত করার জন্য এবং বিদেশী আক্রমণ থেকে রাজ্যটিকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট কেন্দ্রীভূতও ছিল না। আরবের বেশিরভাগ অংশ বেদুইন সমাজের অলিখিত নিয়ম দ্বারা পরিচালিত হতো। এমন কঠোর জীবনযাপনের কারণে তাদের ভেতর যুদ্ধ এবং হতাশা তৈরি হতো।

প্রাক-ইসলামি আরবদের ভাষা ও সংস্কৃতি হয়তো একই ধরনের ছিল,তবে তারা গোত্রীয় পরিচয়, রক্তের প্রতিশোধ এবং ধর্মের দ্বারা শতধা বিভক্ত ছিল। কিন্তু খুব শীঘ্রই আরব এবং তার বাইরে ইসলামের উত্থানের ফলে একটি ঐক্যবদ্ধ আরব রাষ্ট্র গঠনের গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় যায়।

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

কুরবানি, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বিধান। মুফতি শরীফ মোহাম্মদ সাঈদ

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লন্ডনে সিম্পল রিজনের অফিস পরিদর্শন করলেন মুফতি সাইফুল ইসলাম

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লিডসে শায়েখে বাঘা রহঃ-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

লন্ডনের সভায় আলেমরা বি এ এস বি কমপ্লেক্সকে সহযোগিতার আহবান জানালেন।

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বইঃ বশীর আহমদ শায়খে বাঘা রহঃ

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বার্মিংহামে শায়েখে বাঘা রহঃ জীবন ও কর্ম শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বায়রাক্তার টিবি২ দীপ্তিমান করছে তুরস্কের ভাগ্য

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

জার্মানিতে বছরে শতাধিক মসজিদে হামলা; উদ্বিগ্ন মুসলিমরা

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

বুজুর্গ উমেদ খাঁ। চট্টগ্রাম পুনরুদ্ধারের মহানায়ক!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ডুরান্ড লাইন! পাক - আফগান দ্বন্দ্বের রেড লাইন!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ত্রিপুরা ও বাংলার ঐতিহাসিক সম্পর্ক | পর্ব ২

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ত্রিপুরার সাথে ইসলাম এবং বাংলাদেশের সহস্র বছরের যোগসূত্রের সন্ধানে!

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

পূর্ব আফ্রিকায় পর্তুগিজ উপনিবেশ স্থাপন, শোষণ ও ফলাফল

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

আফ্রিকার বুকে পর্তুগীজ কলোনি স্থাপনের ইতিহাস।

The Global Affairs - সর্বশেষ সংবাদ ও শিরোনাম

ইউরোপ থেকে ভারতবর্ষের অবিচ্ছিন্ন জলপথ আবিষ্কার।

the global affairs google play logo the global affairs apple logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ হোসাইন আহমদ

info@theglobalaffairs.info